কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রথমবারের মতো হিন্দুধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজার আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবছরের মতো দীপাবলি ও দামোদর প্রদীপ প্রজ্বলন উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি হিন্দু শিক্ষার্থীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আয়োজন হিসেবে দেখা হচ্ছে।


সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধন করা হয়। পুরো অনুষ্ঠানমালায় ছিল সন্ধ্যা সাতটার দিকে শ্যামা সংগীত, রাত আটটার দিকে দীপাবলির মাহাত্ম্য আলোচনা, রাত নয়টার দিকে দামোদর আরতি ও প্রদীপ প্রজ্বলন এবং রাত দশটার দিকে শ্যামা পূজা। এর মধ্যে দীপাবলি ও দামোদর উৎসবের আয়োজন করে পূজা উদযাপন পরিষদ, আর শ্যামা পূজার আয়োজন করে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।


ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর রায় বলেন, “আজ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীপাবলির সঙ্গে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে কালীপূজা। এটি আমাদের ক্যাম্পাসের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়। এই আয়োজন শুধু ধর্মীয় নয়, বরং ভক্তি, আলো ও ঐক্যের প্রতীক। প্রথমবার মা কালী আরাধনার দৃশ্য দেখে মন আনন্দে ভরে গেছে। মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞানের নয়, মানবতা ও সহাবস্থানেরও এক উজ্জ্বল স্থান।”


পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজীব বিশ্বাস বলেন, “প্রতি বছরের মতো এ বছরও দীপাবলি ও দামোদর প্রদীপ প্রজ্বলন উৎসব আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে আমরা আলোর প্রতীকী বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছি—এই আলো যেন অন্ধকার দূর করে আমাদের জীবনে শুভতা, শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসে।”


শ্যামা পূজা আহ্বায়ক কমিটি ২০২৫-এর সদস্য সচিব অমি দেব বলেন, “মা শ্যামা শক্তি, ন্যায় ও জ্ঞানের প্রতীক। তাঁর পূজার মধ্য দিয়ে আমরা পাই অন্ধকারের ভেতর থেকে আলোর পথে চলার অনুপ্রেরণা। এই পূজা আমাদের আত্মার শক্তি, সহমর্মিতা ও শুভবুদ্ধির শিক্ষা দেয়।”


শ্যামা পূজা আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আকাশ পাল বলেন, “আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি কেবল একটি ধর্মীয় আয়োজন নয়, বরং সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির উজ্জ্বল উদাহরণ। মা কালীর আরাধনার মাধ্যমে আমরা অন্ধকারের মধ্য থেকে আলোর পথে এগিয়ে চলার প্রেরণা পাই। বিশ্ববিদ্যালয় যেমন জ্ঞানের আলো ছড়ায়, তেমনি শ্যামা পূজার এই আয়োজন আমাদের অন্তরের অন্ধকার দূর করার আহ্বান জানায়।”


অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য দর্শনার্থী উপস্থিত ছিলেন। দীপাবলির আলো, আরতির ধ্বনি ও শ্যামা সংগীতের সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আয়োজকরা জানান, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন নিয়মিতভাবে করা হবে।