 
      কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে উত্ত্যক্ত ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সোমবার (০৬ অক্টোবর) লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন— তানভীর হোসেন নাজিম, ফাহিম হাসান অনিক, তাহমনি আহাম্মেদ, মো. নাঈম উদ্দিন এবং মো. ফাহিম হোসেন। অভিযোগকারী নারী শিক্ষার্থী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। দায়ের করা অভিযোগপত্রে আতিকুর রহমান শিপন (ভুক্তভোগীর স্বামী), মো. ইয়াছিন এবং মোহসিন জামিলকে সাক্ষী করা হয়েছে।
নয়জনকে অভিযুক্ত করে দায়ের করা অভিযোগে আটককৃতদের বাইরে আরও তিনজনের নাম রয়েছে। তারা হলেন— তাহামিন আহাম্মেদ, মো. নাঈম উদ্দিন, ফাহিম হোসেন এবং মো. নাজমুল।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গতকাল (০৫ অক্টোবর) দুর্গা পূজার ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন মনতলা রেলস্টেশনে আসলে কয়েকজন যুবক তাদের উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। তাদের আচরণে আপত্তি জানালে তারা আরও বাজে ভাষায় গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায়ে বিকাল পাঁচটার দিকে দূর্গাপুর ইউনিয়নের শাসনগাছা স্টেশনে তানভীর হোসেন নাজিম, অন্যান্যদের সহায়তায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে।
অভিযোগের অন্যতম সাক্ষী ও ভুক্তভোগীর স্বামী আতিকুর রহমান শিপন বলেন, “ট্রেনে উঠার পর কিছু ছেলে আমার এবং আমার স্ত্রীর সঙ্গে বাজে আচরণ করতে থাকে। তাদের মানা করলে উল্টো আরও হুমকি দেয় এবং আমার স্ত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। পরে রেলওয়ে পুলিশ ও থানার পুলিশের সহায়তায় ৫ জনকে আটক করা হয়।”
কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা জানতে পারি, ট্রেনে কিছু ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং করছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ৫ জনকে আটক করি। যেহেতু ঘটনাটি ট্রেনে ঘটেছে, তাই লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।”
লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “একটি নারী শিক্ষার্থীকে ইভটিজিংকে ঘিরে একটি অভিযোগপত্র দায়ের হয়েছে। এখন বিষয়টি তদন্ত হবে। সাক্ষী ও অভিযুক্তদের বক্তব্য নিয়ে তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”
এই ঘটনায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
 সানজানা তালুকদার
                     সানজানা তালুকদার 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                
