সকালের বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম ডুবলো জলাবদ্ধতায়
ছবিঃ সংগৃহীত

আজ বুধবার ভোর থেকে চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টির ফলে নগরের বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, বিশেষ করে যারা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। অনেক এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে গিয়েছিল, যার ফলে যাতায়াতে বিপত্তি দেখা দেয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া একটি লঘুচাপ এবং তার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। মৌসুমি বায়ু বর্তমানে বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরজুড়ে শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬৮.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

নগরের জিইসি মোড়, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, শুলকবহর, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা এবং হালিশহর আবাসিক এলাকায় হাঁটু বা গোড়ালি পর্যন্ত পানি জমার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় এই পানি আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

আগ্রাবাদ এলাকার এক অফিসকর্মী শহীদুল ইসলাম জানান, অফিসে যাওয়ার পথে হাঁটু পানি পার হতে হয়েছে। এতে স্বাভাবিক যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয় এবং রিকশাভাড়াও বেড়ে যায়। বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা ইফতেখার উদ্দিন জানান, অফিসে যাওয়ার পথে দুই জায়গায় পানি জমে রাস্তায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে।

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রায় ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তিনটি সংস্থা—সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসব প্রকল্পের কাজ ৫ থেকে ১১ বছর ধরে চলমান এবং এরই মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পগুলো শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অন্তত পাঁচটি সভা হয়েছে, যেখানে জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা স্বীকার করেন, সকালে জোয়ারের কারণে শুলকবহরসহ কয়েকটি এলাকায় পানি জমে ছিল। তবে এসব পানি দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়নি, বরং দ্রুতই নেমে যায়।