
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হলেও, তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও ফলাফল ঘোষণা হয়নি। ১৯৯২ সালের পর প্রায় ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনেই ভোট গণনার দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষার্থীদের ধৈর্য পরীক্ষা করছে।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত নির্বাচনের ভোট গণনা অব্যাহত ছিল। চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করলে গণনা প্রক্রিয়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ভোট গণনায় ব্যবহৃত ম্যানুয়াল পদ্ধতি কারণে ত্রুটির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
ভোটার ও প্রার্থীর সংখ্যাঃ
জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১,৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫,৭২৮ এবং ছাত্র ৬,০১৫। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ২১টি হল সংসদে মোট ৩১৫টি পদে ৪৭৭ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।সাতটি প্যানেল অংশগ্রহণ করছে।
এর মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল হলোঃ
ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল , ছাত্রশিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট , প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য,গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম ।
বাকি তিনটি আংশিক প্যানেল দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ।
ভোট গণনায় সমস্যাঃ
একাধিক শিক্ষক ও কমিশনার গণনার দায়িত্ব থেকে সরে আসায় ভোট গণনা আরও ধীর হয়ে গেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, “সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা সম্ভব হবে, তবে নির্দিষ্ট সময় বলা যাচ্ছে না।”
ইতিহাস পুনরাবৃত্তিঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসুর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৯৭২ সালে। পরপর তিন বছর নির্বাচনের ধারাবাহিকতা থাকলেও ১৯৭৪ সালের পর নির্বাচন স্থগিত হয়। ১৯৯২ সালের নির্বাচনে সহিংস ঘটনার পর ভোট কার্যক্রম স্থগিত হয়। ৩৩ বছর পর ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ভোট হলেও ইতিহাসের মতো অব্যবস্থাপনা ও দেরিতে ফলাফল শিক্ষার্থীদের মধ্যে একই ধরনের হতাশা তৈরি করছে।