কাজীপুর কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার টেংলাহাটা রফাতুল্লাহ ইফাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। উচ্চ আদালতে রিট চলমান থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।


রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনতাসির মাহবুব রাকিব খান বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান গত ১৩ই জুলাই বিচারপতি ফাতেমা নাজিব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট দায়ের করেন। ওই রিটে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের আবেদন জানানো হয়, যা বর্তমানে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া নিয়োগ স্থগিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর ‘ল’ইয়ার সার্টিফিকেট’ও পাঠানো হয়েছে।


কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২০শে আগস্ট সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন অবসর গ্রহণ করলে নিয়ম ভেঙে সিনিয়র চারজন শিক্ষককে পাশ কাটিয়ে ৫ম জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাইদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়। এ বিষয়ে তদন্তে উপজেলা শিক্ষা অফিসারও অনিয়মের প্রমাণ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


এরই মধ্যে কলেজ সভাপতি এস এম রেজানুর রহমান লিটন ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুর রহমানের যোগসাজশে ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং আগামী শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কলেজে পাঁচটি পদ শূন্য থাকলেও কেবল ভাইস প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে দেখছেন গুণীজন। স্থানীয়দের দাবি, সভাপতির ছোট ভাই আব্দুল মমিন বাবুকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে এ প্রক্রিয়া চলছে।


অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বলেন, “আমি আজকেই জানতে পারলাম আদালতে রিট হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষা হবে কিনা, তা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”


এদিকে ভারপ্রাপ্ত কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, হাইকোর্টের রিট বিষয়ে এখনো তার দপ্তরে কোনো চিঠি আসেনি। চিঠি পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে যদি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তবে সংঘাত ও অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।