
চট্টগ্রামে মাদকসহ গ্রেপ্তার হওয়া এক নারী পুলিশের কাছে এবং আদালতে ভুয়া নাম–পরিচয় ব্যবহার করলেও শেষ পর্যন্ত কারাগারে গিয়ে আঙুলের ছাপ পরীক্ষায় ধরা পড়েছে তাঁর প্রকৃত পরিচয়।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-৯ গত ১৪ আগস্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরের চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করে। তখন তিনি নিজেকে রহিমা আক্তার (৩৫) পরিচয়ে তুলে ধরেন। তাঁর নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয় এবং ১৫ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কিন্তু চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশের পর নিয়ম অনুযায়ী তাঁর আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হলে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে অন্য নাম-পরিচয় মিলে যায়। আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে—তিনি আসলে মনোয়ারা বেগম, পিতা বাবুল মিয়া, গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালী এলাকায়। অথচ কারাগারে এসেছিলেন ভুয়া নাম ও নগরের মোহরার ঠিকানা ব্যবহার করে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, আসামি নিজেও স্বীকার করেছেন জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পুনরায় গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি মিথ্যা নাম–পরিচয় ব্যবহার করেছিলেন। বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দীদের আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু হয়। এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে বহু আসামির প্রকৃত পরিচয় উদঘাটিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৬ জন ভুয়া পরিচয়ে আত্মসমর্পণ করলেও ধরা পড়েছেন বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রায়হান উদ্দিন মাহমুদ বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আসামি যে নাম বলেছিলেন, তাই নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে আইনজীবীদের মতে, গ্রেপ্তারের পর দ্রুত যাচাই-বাছাই না করায় আসামিরা ভুয়া নাম–ঠিকানা ব্যবহার করে জামিনে বের হয়ে যান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা স্বজনদের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র মিলিয়ে দেখা হলে এ ধরনের প্রতারণা ঠেকানো সম্ভব।