
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘গানের আড্ডা।'বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে প্রতি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিকেলে ভেসে আসে গানের সুর, হাততালির শব্দ আর উচ্ছ্বাসের ঢেউ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ‘ক্যাম্পাস আনপ্লাগড–কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর কো-অর্ডিনেটর লিয়ন ত্রিপুরার উদ্যোগে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।এই আয়োজনে পরিবেশিত হয় লোকগীতি, ব্যান্ড গান, আধুনিক বাংলা গান, পুরোনো ক্লাসিক কিংবা ইংরেজি মেলোডি।
লিয়ন ত্রিপুরা জানান , "শুরুটা ছিল একেবারেই অনানুষ্ঠানিক। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বুঝলাম, এখানে অনেক প্রতিভাবান গায়ক–বাদক আছেন, কিন্তু সবার কাছে মঞ্চ নেই। একদিন ইমন দা (ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমন সাহা) আর আমার ব্যাচমেট শুভ (ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শুভ নাথ) মিলে রুমে গান করছিলাম। তখনই মনে হলো যদি নিয়মিত আয়োজন হয়, সবাই নিজেদের প্রতিভা দেখাতে পারবে।এই ভাবনা থেকেই প্রথম আড্ডার আয়োজন হয় ২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে। তখন ছিল মাত্র দুইটা গিটার, একটা কাহন, কয়েকজন গায়ক, আর ১৫০–২০০ জন শ্রোতা। আয়োজন ছিল ছোট, কিন্তু পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত ও উষ্ণ।"
তিনি আরও জানান, "বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লাস শেষ হয়ে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা ফ্রি থাকে, ফলে আড্ডা জমে ওঠে। এ দুই দিনই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে ‘গানের আড্ডা’।শুরুতে বাদ্যযন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেমের অভাব ছিল। অনেক সময় ব্যক্তিগত খরচে আয়োজন চালাতে হতো। পরে এগিয়ে আসেন পরিচিত বড় ভাই ও প্রতিষ্ঠান মালিকরা—ভাইভাসিটি ফুড কোর্টের সিইও কামাল ভাই, একুস্টিকার সৈকত দাদা প্রমুখ। তারা সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া, পোস্টার প্রিন্টিং এবং স্ন্যাক্সের খরচ বহন করেন। আয়োজকরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।"
লিয়নের মতে, “এ আয়োজন বন্ধুত্ব, সহমর্মিতা আর সাংস্কৃতিক চর্চাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। নতুনরা সহজেই ক্যাম্পাসে মিশে যেতে পারছে।” একবার এক জুনিয়র এসে বলেছিল—“ভাই, আপনার গান শোনার জন্যই আমি প্রতি বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে আসি।” এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই তাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
ভবিষ্যতে নিয়মিত আড্ডা চালিয়ে যাওয়া এবং বছরে অন্তত একবার বড় কনসার্ট করা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে লাইভ শো করারও ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি।