শটবারে ঘুম ভাঙে—না হলে সব নষ্ট হতো পানিতে!
ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চকবাজারে অবস্থিত মুহম্মদ আলী শাহ লেনের বাসিন্দা আবদুল হামিদ ভোরবেলা হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে দেখেন, তার বাড়িতে স্রোতের মতো পানি ঢুকছে।

দ্রুত পরিবারের সবাই মিলে বাসার আসবাবপত্র সরিয়ে পানির হাত থেকে রক্ষা পান—যদি তাড়াতাড়ি না ঘুম ভেঙে উঠতেন, তাহলে সবই নষ্ট হয়ে যেত।

স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, ভোর পাঁচটা থেকে সাতটা পর্যন্ত এ অঞ্চলে পানি জমে ছিল; পানি নেমে গেলে ময়লা ও নোংরা পানি পরিষ্কার করতে হয়েছে।

সম্প্রতি এই এলাকার খাল-নালা পরিষ্কার না করার কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন রোববার রাতে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারপরের রাতের ভারী বর্ষণে নগরের বিভিন্ন অংশ—including চকবাজার—জলাবদ্ধতায় ভুগে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নগরে ৮১ মিমি বৃষ্টি হয়, যার মধ্যে রাত ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এককালে ৫০ মিমি বৃষ্টি নামে, যা মৌসুমি বায়ুর কারণে।

এই ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও ঘন জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। ২৮ জুলাই ১০২ মিমি বৃষ্টিতে নগরের বহু এলাকা—রাস্তাঘাট ও অলিগলি, বসতঘরসহ— হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়।

গত তিন বছরে চট্টগ্রামে ৩০ বার জলাবদ্ধতার ঘটনা ঘটেছে: ২০২৪ সালে ৬ বার, ২০২৩ সালে ১৪ বার, ২০২২ সালে ১০ বার। এই মৌসুমে অন্তত চার দফায় এলাকা ডুবে গেছে।

আজ ভোর রাতের ভারী বর্ষণে নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, বাদুড়তলা, জিইসি মোড়, ঝাউতলা এবং আরও যেসব এলাকায় রাস্তা-ঘাট জলমগ্ন হয়, সেখানে সাধারণ মানুষ বিশেষ কষ্টে পড়েছেন। ঝাউতলা বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, “হাঁটু সমান পানিতে অফিসে যেতে গিয়ে দেরি হয়, চার জায়গায় পানি জমে ছিল।”

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে সিডিএ, সিটি করপোরেশন, এবং পানী উন্নয়ন বোর্ড মিলিয়ে কয়েকটি প্রকল্প চলছে, যা মোট ১৪,৩৮৯ কোটি টাকা বাজেটে বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত আট বছরে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে ৯,৮৫২ কোটি টাকা। তবে এখনও—নতুন খাল খনন, জলকপাট, খাল সংস্কার, বালু ফাঁদ, নালা নির্মাণ—সব কাজ শেষ হয়নি।