অবশেষে চালু চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের বহির্বিভাগ
ছবিঃ সংগৃহীত

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে আবারও চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বহির্বিভাগের টিকিট দেওয়া শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে, বহির্বিভাগে শত শত রোগীকে চিকিৎসা গ্রহণের অপেক্ষায় দেখা যায়।

গত ২৮ মে "জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে" আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালের সকল চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভর্তিকৃত রোগীরাও হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ৪ জুন জরুরি বিভাগ সীমিত আকারে চালু হয়। গতকাল বুধবার, জরুরি বিভাগে ৮০ জন রোগী সেবা নেন এবং পাঁচজনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। বর্তমানে অন্তত ৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, আজ বহির্বিভাগ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং টিকিট দেওয়া হবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

মানিকগঞ্জ থেকে এসেছেন মাইদুল ইসলাম। তিনি জানান, অনেক দিন ধরেই মায়ের চোখের চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সংঘর্ষের কারণে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আসতে পারেননি। আজ বহির্বিভাগ খোলার খবরে আসেন এবং এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য এই হাসপাতাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি সেবা ব্যাহত না হওয়ার জন্য আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

বরিশাল থেকে ছেলের চোখের চিকিৎসায় আসা জোবায়দা খাতুন জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ মিললেও ছেলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এখনো করা সম্ভব হয়নি, কারণ অন্যান্য সেবা এখনো বন্ধ রয়েছে। তিনি শুনেছেন, আগামী শনিবার থেকে পুরোপুরি সব সেবা চালু হবে, তাই অপেক্ষায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ এখনও বন্ধ থাকায় পুরোপুরি রোগী দুর্ভোগ কাটেনি। রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনো পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার সদস্যরা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অবস্থান করছেন। এক আনসার সদস্য জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং শনিবার থেকে সব বিভাগ চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, “আমরা ধাপে ধাপে চিকিৎসাসেবা চালু করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছি। আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে এবং শনিবার থেকে হাসপাতালের সব কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে।”

ঈদের আগে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৫৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, যাঁদের অধিকাংশই এখন বাড়ি চলে গেছেন। তবে কেউ আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র নেননি। সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারা পুনরায় হাসপাতালে ফিরলে পরিস্থিতি কেমন হবে—তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন।

পরিচালক জানে আলম আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে আহত যাঁরা হাসপাতালে ছিলেন, তাঁরা আমাদের কোনো তথ্য দিচ্ছেন না। এতে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।”