
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা এবং দেশটিতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, ৬ জুন ভারতে পৌঁছান জয়। পরদিনই ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। মূলত ঈদের ছুটিতে মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতেই তাঁর এই সফর, যা রাজনৈতিক চেয়ে বেশি পারিবারিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আওয়ামী লীগপন্থী নেতাদের বরাতে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড এবং কিছুদিন আগে পাসপোর্ট অর্জন করেন। এরপর থেকেই তাঁর ভারত সফরের জল্পনা চলছিল।
ভারতের নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে জানা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারত আগমনের পরিকল্পনা ছিল আরও কয়েক মাস পরে, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির পর তা এগিয়ে আনা হয়। ৬ জুন তিনি দিল্লিতে পৌঁছালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁকে শেখ হাসিনার গোপন বাসস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে শেখ রেহানাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
যদিও জয়কে বিমানবন্দর থেকে ভিভিআইপি পাইলট কার বা সামরিক শোভাযাত্রায় নেওয়া হয়নি, তবুও তাঁর চলাচল ছিল গোপন ও সুরক্ষিত।
শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, যিনি দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত, তাঁর সঙ্গে ভাইয়ের দেখা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, এই সফর জয় ও শেখ হাসিনার পারিবারিক পুনর্মিলনের অংশ। তাঁরা ঈদ একসঙ্গে কাটিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত সময় কাটাচ্ছেন। রাজনৈতিক আলোচনা যে একেবারেই হয়নি তা নয়, তবে প্রাধান্য পেয়েছে পারিবারিক সম্পর্ক।
গত বছর ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে শেখ হাসিনা ভারতে পাড়ি জমান। প্রথম দিকে তাঁকে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে রাখা হলেও পরে দিল্লির একটি গোপন ঠিকানায় স্থানান্তর করা হয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, শেখ হাসিনার চলাচল ও সাক্ষাৎকে যথাসম্ভব সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও তাঁর চলাচল পুরোপুরি বন্ধ নয়, তারপরও তা নিয়ন্ত্রিত এবং প্রয়োজনসাপেক্ষ।
এখনও পর্যন্ত কোনো নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছেন—এমন তথ্য পাওয়া যায়নি, যদিও নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রগুলো বলছে, জয় ভারতে থেকে দলের কাজে সরাসরি যুক্ত হওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছেন না। এমনকি কলকাতা সফরের সম্ভাবনা থাকলেও এই মুহূর্তে সেখানেও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই।
বর্তমান অবস্থায় ধারণা করা হচ্ছে, জয় কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতে নিজের সফর শেষ করে ফিরে যাবেন।