
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে অবাধে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে, যা স্থানীয়রা মূলত বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ করেন।
এমন বালু উত্তোলনের ফলে বর্তমানে নদীর তীর ও চরাঞ্চলের বাস্তুসংস্থান ও ফসলি জমি তীব্র বিপদের মুখে রয়েছে। লোকজন জানাচ্ছেন, এর ফলে নদী ভাঙনের ঘটনাও ঘটছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়-অনুমোদিত কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, “কমপক্ষে ৩০টি ড্রেজার মেশিন মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনে নিয়োজিত রয়েছে। বেশ কিছু অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে ১০টি ড্রেজার নষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, অবশিষ্ট মেশিনগুলোরও বিরোধী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী, চরবংশী ইউনিয়নের মোল্লারহাট ও চরকাছিয়া এলাকা জুড়ে প্রায় চার কিলোমিটার স্থানে দিন-রাত অবিরাম বালু উত্তোলন সামনে এসেছে। বছর খানেক আগে এমন কাজ করতেন আওয়ামী লীগ-ভর্তি দলীয় নেতা; কিন্তু ২৮ সংখ্যার দলীয় পরিবর্তনের পর, এখন এটি স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
সরাসরি অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
• charbanshi ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সভাপতি কবির সরকার,
• স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল ব্যাপারী,
• যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন,
• ৮ ওয়ার্ডের যুবদল সভাপতি আদম আলী ও ৫ নম্বর যুবদল নেতা জালাল সরদার সহ কয়েকজন ছাত্ররাজনৈতিক নেতা।
এসব তথ্য স্থানীয়রা ও দলীয় সূত্রে দিয়েছেন।
স্থানীয় মোহাম্মদ সামাদ আলী জানান, তার দুই বিঘা জমির এক বিঘা নদীর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি জমির জন্য তিনি দিনের পর দিন চিন্তিত—কারণ ড্রেজিং-এ এভাবে অবৈধ খনন করতে থাকলে নদীর তীর দ্রুত ক্ষয় হবে।
চরবংশীর একজন বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, “আমাদের কৃষিজমি অত্যন্ত উর্বর, কিন্তু এখন নদী থেকে ধ্বংসাত্মকভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে। বাধা দিতে চাইলে আমরা ভয় পাই — বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আমাদের প্রভাবশালীরা দেয়।
অভিযুক্ত এক ব্যক্তি, জালাল সরদার, নিজেকে ছয় নম্বর ওয়ার্ডে যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে পরিচিত করে বলেন, “আমার একটি ড্রেজার আছে, কিন্তু প্রশাসনের অভিযান শুরু হলে কয়েকদিন ধরে নদী থেকে বালু তোলা বন্ধ রয়েছে।”
রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম পুরো ঘটনায় সংগঠনের কোনও সমর্থন নেই জানিয়ে বলেন:
“হাইকোর্টের নির্দেশনাও রয়েছে, আর দলের নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি অপরাধে জড়িত হন তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনির দ্রুত হস্তক্ষেপেও অনুরোধ জানিয়েছেন।