গাজার রক্তে প্রযুক্তি মুনাফাঃ মাইক্রোসফট-অ্যামাজনের দায় কোথায়?
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত সামরিক আগ্রাসনে যেখানে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ, শিশু ও নারী নির্বিচারে প্রাণ হারাচ্ছে, সেখানে এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও বিপুল মুনাফা অর্জন করছে মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা।

এই কোম্পানিগুলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ক্লাউড কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), facial recognition ও ডেটা অ্যানালাইটিক্স প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, যা সরাসরি সামরিক নজরদারি, লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকরণ, ড্রোন নিয়ন্ত্রণ এবং হামলার সিদ্ধান্তে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে “Project Nimbus” নামে একটি ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় অ্যামাজন ও গুগল ইসরায়েলের সরকারি ও সামরিক সংস্থাগুলোকে উচ্চক্ষমতার ক্লাউড ও AI সেবা দিচ্ছে, যা গাজায় সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেস্কা আলবানিজ ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে এই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ভূমিকাকে “গণহত্যার অর্থনীতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেন, তারা এই ভয়াবহতা থেকে মুনাফা কুড়াতে এক ধরনের অপরাধে অংশ নিচ্ছে।

এই অবস্থার বিরুদ্ধে মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের হাজার হাজার কর্মী “No Tech for Apartheid” আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং দাবি তুলেছেন যে তাদের কোম্পানির প্রযুক্তি যেন মানবতা ধ্বংসে ব্যবহার না হয়। তবু কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের নৈতিক দায় না নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব অব্যাহত রেখেছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে—মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রযুক্তি জায়ান্টদের জবাবদিহি কোথায়? তারা কি শুধু প্রযুক্তি দিচ্ছে, না কি পরোক্ষভাবে দমন-পীড়ন ও গণহত্যার সহযোগী হয়ে উঠেছে? বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে থাকা সত্ত্বেও, কর্পোরেট স্বার্থ ও সামরিক চুক্তির মুনাফাই কি এখন নৈতিকতার ওপরে স্থান পাচ্ছে?