
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত সোমবার ঘোষণা করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবারের শান্তি নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। এই মনোনয়নের জন্য নেতানিয়াহু নোবেল কমিটিকে একটি চিঠি লিখেছেন, যার একটি কপি তিনি সরাসরি ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে তুলে দিয়েছেন।
গত সোমবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে নেতানিয়াহু ওই চিঠির কপি হাতে তুলে দেন এবং একসঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন। এ সময় নেতানিয়াহু বলেন, “ট্রাম্প একের পর এক দেশ ও অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।”
বিগত বছরগুলোতে ট্রাম্প তার সমর্থক ও অনুগত আইনপ্রণেতাদের কাছ থেকে শান্তি নোবেল পুরস্কারের জন্য একাধিকবার মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে এখনো তিনি এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পাননি এবং এর জন্য তিনি প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত-পাকিস্তান ও সার্বিয়া-কসোভোর মধ্যে সংঘাতের সমাধানে তাঁর মধ্যস্থতা নরওয়ের নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। এছাড়া মিসর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে শান্তি রক্ষা এবং ইসরায়েল ও কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে ‘আব্রাহাম চুক্তি’ বাস্তবায়নে তাঁর অবদানও উল্লেখযোগ্য বলে তিনি মনে করেন।
নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী’ হিসেবে উপস্থাপন করে আসছেন। ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত শেষ করতে তিনি নিজের আলোচনার দক্ষতা কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি নেতানিয়াহুর তৃতীয় হোয়াইট হাউস সফর। এই সময় দুই নেতা বৈঠক করেন এমন এক সময়ে যখন ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি কাজে লাগানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন।
নৈশভোজ শুরুতে সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি মনে করি না কিছু আটকে আছে, বরং সবকিছু খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছে।”
ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বসে ট্রাম্প বলেন, গাজায় প্রায় ২২ মাস ধরে চলা সংঘাত বন্ধে হামাস ইচ্ছুক বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, “তারা আলোচনা করতে চায় এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে আগ্রহী।”
নৈশভোজ চলাকালীন কাতারের দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনার দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহু পূর্ণাঙ্গ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, গাজা উপত্যকার ওপর ইসরায়েল সবসময় ‘নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ বজায় রাখবে। তিনি বলেন, “এখন কেউ বলবে এটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র নয়, কারণ এটি আদতে একটি রাষ্ট্রই নয়। আমাদের এখান থেকে কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেই।”
নৈশভোজ চলাকালীন হোয়াইট হাউসের সামনে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’র অভিযোগ এনে প্রতিবাদ করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন।