
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মুখে রংপুর মহানগর হাজীরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আল মামুন শাহকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে এই পদ থেকে সরিয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে বদলি করা হয়।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ওসি আবদুল আল মামুন শাহ এখন থেকে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক রাজিবুল ইসলাম, যিনি এখন হাজীরহাট থানার নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে রোববার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ কমিশনারকে ফোন করা হলেও তিনি মিটিংয়ে থাকার কারণে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ওসি আবদুল আল মামুন শাহ নিজেই বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর নগরীর ধাপ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করে হাজীরহাট থানা-পুলিশ। আদালতের নির্দেশে পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এই গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও তাঁর পরিবার অভিযোগ তুলেছেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। মাহমুদুল হকের স্ত্রী মাসুবা হাসান বলেন, যিনি মারা গেছেন তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান, অথচ তাঁর স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে সেই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাঁর দাবি, ওসি মামলার বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পরে নিজেই আসামির তালিকা তৈরি করেছেন।
মাসুবা আরও বলেন, "আমার স্বামীকে ফাঁসাতে চক্রান্ত করছেন দুই ব্যক্তি—একজন চিকিৎসক ও আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।"
মাহমুদুল হকের জামিন শুনানি আজ (রোববার) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তাঁর আইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করা হয়েছে এবং তাঁরা আদালতে বলবেন যে এটি একটি মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সম্মানহানিকর মামলা।
এদিকে, জামিন শুনানির খবরে আজ সকাল ১০টা থেকেই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আদালত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। তাঁরা স্লোগান দিয়ে শিক্ষক মাহমুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, "আমরা চাই মাহমুদুল হককে অবিলম্বে সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দেওয়া হোক। সে কারণেই আমরা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছি।"