
আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে ফরিদপুরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। জেলার বিভিন্ন মন্দিরে প্রতিমা শিল্পী, স্বেচ্ছাসেবক ও মন্দির কমিটির সদস্যরা এখন উৎসব আয়োজনের ব্যস্ততায় দিন পার করছেন।
ফরিদপুরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার শেষ ধাপের কাজ। কিছু মন্দিরে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শেষ হলেও, অনেক জায়গায় এখনও চলছে রং করা, আলোকসজ্জা এবং অন্যান্য প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, সময় স্বল্পতার মধ্যেও তারা চেষ্টা করছেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে।
শহরের প্রতিমা শিল্পী বিপ্লব পাল বলেন, এ বছর তিনি মোট ১০টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন। তবে আগের বছরের তুলনায় আয় কিছুটা কমে গেছে। পূর্বে প্রতিটি প্রতিমা থেকে তিনি প্রায় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা আয় করতেন, কিন্তু এবার পারিশ্রমিক তুলনামূলক কম। তবুও উৎসবের আমেজে কাজের প্রতি আগ্রহ কমেনি।
এদিকে শহরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে সাজসজ্জার প্রস্তুতি জোরদার হয়েছে। আলিপুর এলাকার বান্ধব পল্লীর স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে গত দুই মাস ধরে গেট ও প্যান্ডেল নির্মাণে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা আশা করছেন, স্বহস্তে নির্মিত এই সাজসজ্জা দর্শনার্থীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় হবে।
তবে শহরের অনেক মণ্ডপে এখনও আলোকসজ্জার কাজ শেষ হয়নি। মন্দির কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী শনিবার ও রোববারের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আগামী রোববার মহাষষ্ঠী ও বেল পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব, যা চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। উৎসবের মধ্যে রয়েছে মঙ্গলবার অষ্টমীর দিন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে কুমারী পূজা। প্রতিবারের মতো এবারও কুমারী পূজা দর্শনার্থীদের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন আয়োজকরা।
পূজাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে মন্দির কর্তৃপক্ষ নিয়েছে নানামুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বেশ কিছু মন্দিরে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব এড়াতে রাখা হয়েছে এসি/ডিসি লাইট ও চার্জার লাইটের ব্যবস্থা।
মন্দির কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজা জাঁকজমকপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, উৎসব চলাকালীন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।