
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিচিত সৌন্দর্যবর্ধক স্থান মীর মুগ্ধ সরোবর বা হাতিরঝিল এখন ঝোপঝাড়, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা না হওয়ায় দর্শনার্থী ও শিক্ষার্থীদের পদচারণা কমেছে, এবং প্রোগ্রামের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে।
স্টেইট অফিসের প্রধান আলাউদ্দিন আলাল সাংবাদিকদের জানান, “আমরা এক মাস আগে কচুরিপানা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কয়েকদল শ্রমিকের সাথে যোগাযোগ করলেও কেউ এক লাখ টাকার নিচে কাজের জন্য রাজি হয়নি। অথচ আমাদের বাজেট মাত্র ২৫ হাজার টাকা, তাই কাজটি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। শীতকালে প্রোগ্রামের সংখ্যা বেড়ে যাবে; তার আগেই চারপাশ পরিষ্কার করা প্রয়োজন।”
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের এস্টেট অফিস থেকে এক লাখ টাকা বাজেট দেখানো হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে দেখেছি একই কাজের জন্য মাত্র এক-তৃতীয়াংশ টাকায় কচুরিপানা কাটার মেশিন পাওয়া সম্ভব। মেশিন কিনলে খরচ অনেকটাই কমবে। বর্ষার পরে কাজ করলে শীতে পুনরায় পরিষ্কারের প্রয়োজন হবে না। আমরা খুব শীঘ্রই পরিষ্কার কাজ সম্পন্ন করবো।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপশ্চিম-উত্তর কোনে অবস্থিত এই সরোবরটি বর্তমানে ঝোপঝাড় ও আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। পাশে অবস্থিত মেডিকেল সেন্টার, প্রকৌশল ভবন ও আইআইইআর ভবন ছাড়াও নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ক্লাসের ফাঁকে এবং বিকেলে শিক্ষার্থীরা সিঁড়িতে বসে আড্ডা দেয়। তবে দীর্ঘদিন পরিচ্ছন্ন না থাকায় পরিবেশ এখন অস্বাস্থ্যকর ও দূর্গন্ধপূর্ণ।
একসময় সরোবরটির মধ্য দিয়ে পরিষ্কার পানি প্রবাহিত হতো, অতিথি পাখি আগমন করত এবং চারপাশ মনোমুগ্ধকর ফুলে আচ্ছাদিত থাকত। কিন্তু এখন কচুরিপানা ও শেওলায় পুরো লেক ভর্তি, পানির প্রবাহ বন্ধ এবং অতিথি পাখির আগমন বিলুপ্ত হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত লাইটিং না থাকায় রাতের সময়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল কষ্টসাধ্য এবং অন্ধকারে মাদকের আসরও দেখা যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, “ক্যাম্পাসে আসার আগে শুনেছি সরোবরটি মুগ্ধকর ছিল, কিন্তু বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও চোখে পড়ছে না। গ্রীষ্ম ও শীতকালে লেকে পানি থাকে না, থাকলেও কচুরিপানায় ভরে আছে। প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিক, আমরা চাই সরোবরের প্রাচীন সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হোক।”