
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের পাথরাইল ও শাশুনীয়া গ্রামের কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীরা দুর্গাপূজা ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পূজা উপলক্ষে কলস, হাঁড়ি, পাতিল, খুঁটি, সারোয়া, প্লেট, প্রদীপ, থালা ও খেলনাসহ নানা ধরনের মাটির সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। পালবাড়ীতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে পূজা মেলায় বিক্রির জন্য মাটির বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছেন।
মৃৎশিল্পী অসিম পাল (৫০) জানান, “দুর্গাপূজার মেলায় মাটির সামগ্রীর চাহিদা থাকে। তবে সারা বছর প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে আমরা কোণঠাসা হয়ে পড়ি। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেকেই এই পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।”
মৃৎশিল্পী জয় পাল (৪০) বলেন, “এই সময় বিক্রি ভালো হয় বলে কিছুটা স্বস্তি পাই। তবে সারাবছর মাটির জিনিস বিক্রি করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সরকারি অনুদান ছাড়া এ শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন।”
মৃৎশিল্পী নমিতা পাল (৩৯) বলেন, “আগে প্রতিটি ঘরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল ব্যবহার হতো। এখন প্লাস্টিক ও সিলভারের জিনিসে বাজার দখল হয়ে গেছে। তবে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে এখনো কিছুটা বিক্রি হয়। সরকার পৃষ্ঠপোষকতা দিলে মৃৎশিল্প আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।”
গ্রামীণ সমাজে একসময় প্রতিটি বাড়িতেই মাটির জিনিস ছিল অপরিহার্য। এখন ব্যবহার কমলেও দুর্গাপূজা, বিয়ে, পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান ঘিরে কিছুটা বিক্রি হয়। তবে আধুনিকতার চাপে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন মৃৎশিল্পীরা।