
ঢাকার বুকে গড়ে ওঠা যে কোনও নতুন আবাসিক প্রকল্পকে ঘিরে নাগরিকদের প্রত্যাশা থাকে—পরিকল্পিত অবকাঠামো, নিরবিচ্ছিন্ন যাতায়াত, আর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো। সামান্য বৃষ্টিতে যখন রাজধানীর অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে, তখন আশার আলো হয়ে আসা ‘আধুনিক’ প্রকল্পগুলোর অবস্থাও দেখা যায় প্রায় একই রকম। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ জহুরুল ইসলাম সিটি।
ইস্টার্ন হাউজিং-এর এই বহুল প্রচারিত প্রকল্পে নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। কার্যকর সুয়ারেজ লাইন কিংবা জলাধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানও প্রায় অনুপস্থিত। ফলে মাঝারি বৃষ্টিপাতেই এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় হাঁটুসমান জলাবদ্ধতা।
এম ব্লক, এইচ ব্লক, এল ব্লক এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকসংলগ্ন রোডগুলো সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার। স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টিতে খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চলাফেরা যেন এক বিপজ্জনক অভিযান।
সোসাইটির সভাপতি আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইস্টার্ন হাউজিং-এর দায়িত্ব, সোসাইটির নয়।
ইস্টার্ন হাউজিং এর এই প্রকল্পের ইনচার্জ আলতামাস করিম জানান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত কাজ শুরু হবে। তবে পুরো এরিয়া নিয়ে কাজ করা তাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি মনে করেন, রাজউক, ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন এবং ইস্টার্ণ হাউজিং—এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় ছাড়া জহুরুল ইসলাম সিটির জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।
তবু প্রশ্ন রয়েই যায়—যে শহরায়নের দৃষ্টান্ত হিসেবে এই প্রকল্পকে তুলে ধরা হয়েছিল, সেই স্বপ্নের ঠিকানায় বর্ষা মানেই কেন আতঙ্ক?
পরিকল্পনার নামে যেখানেই আধুনিকতার মোড়ক, সেখানেই তো জেগে ওঠে আরেকটি শঙ্কা—সমাধানের আশ্বাসের বৃষ্টি তো দীর্ঘদিন ঝরছে, বাস্তবতার মাটির গন্ধে চলতে বাসিন্দাদের অপেক্ষা করতে হবে আর কতদিন?