ভারতের বিপক্ষে কি জ্বলে উঠবে সাইফ?
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
এশিয়া কাপে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়েই আলোচনায় চলে এসেছেন সাইফ হাসান। তার ঝড়ো ব্যাটিং শুধু ম্যাচ জেতায়নি, বরং প্রতিপক্ষ দলগুলোর কৌশলেও এনে দিয়েছে নতুন সমীকরণ।


ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া সাইফের ব্যাটিং দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “সাইফ যেভাবে ব্যাট করল, আমরা আলোচনা করছিলাম তার যোগ্যতা টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষ সারির ওপেনার হওয়ার মতো না। কিন্তু সে যেভাবে হাজির হলো, কোনো দ্বিধা ছিল না, নিজেকে নিয়ে সন্দেহে ভোগেনি। তার পরিসংখ্যান মাঝারি মনে হলেও এই ব্যাটিং প্রমাণ করেছে সে সিরিয়াস প্রতিভা।”


এশিয়া কাপ শুরুর আগে অনেকেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। ভারতের সাবেক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলেছিলেন, “ব্যাটিংয়ে লিটন ছাড়া কোনো ক্লাস দেখি না।”


জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও বলেছিলেন, “লিটন রান পেলে বাংলাদেশ অন্য দল।” অর্থাৎ, বাংলাদেশের ব্যাটিং অনেকটাই লিটন দাসকেন্দ্রিক এমন ধারণাই ছিল প্রতিপক্ষের। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাইফের ব্যাটিং সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে।


সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৫ বলে ৬১ রান করে জয় এনে দেন সাইফ। লিটনের সঙ্গে তার জুটি গড়ে ওঠে ভিন্ন ধাঁচে লিটন স্ট্রাইক ঘুরিয়ে দেন, আর মূল আক্রমণ চালান সাইফ। প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় না থাকা এই ইনিংসই ‘বিনা মেঘে বজ্রপাত’ হয়ে দাঁড়ায়।


সাইফের ক্যারিয়ার এত দিন ছিল আসা-যাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ। চার বছরে জাতীয় দলে মাত্র ৮ ম্যাচ, এর মধ্যে দীর্ঘ বিরতি। তবে সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজে ১৯ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংসের পর থেকেই তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের অধীনে অনুশীলন করে শটের পরিসর বাড়ানোর প্রমাণ মিলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই।


তাঁর লেগ সাইডে শটের পরিসর, বাঁহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে এগিয়ে এসে ছক্কা মারার সক্ষমতা এবং নুয়ান তুষারার বিপক্ষে খেলা চোখজুড়ানো ফ্লিক শট ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টকেও ভাবাবে। বুমরা কিংবা অর্শদীপ সিং—যেই বোলারই হোক, সাইফকে আটকাতে পরিকল্পনা সাজাতে হবে।


সাইফ হাসান সফল হোক বা না হোক, একটি ইনিংস দিয়েই প্রতিপক্ষের হিসাব পাল্টে দিয়েছেন। এর ফলে বাংলাদেশ দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের জন্যও তৈরি হয়েছে বড় সুযোগ।