শাটডাউনে রাবি, অচল রাকসুঃ দিশেহারা প্রার্থীরা কী ভাবছেন
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্যকোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে মুখোমুখি অবস্থানে সম্পূর্ণ অচলবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ক্লাস, পরীক্ষা ও সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতিও কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে।


এই পরিস্থিতির কারণে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা বৈঠকের পর জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তারা যথাসময়ে নির্বাচন করতে চান। তবে এখনও তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। গতকাল থেকেই অনেক শিক্ষার্থী বাসায় চলে যাচ্ছেন। আজ সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের প্রধান দুটি গেইটে বাড়িমুখি শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। প্রার্থীরাও নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।


ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্যকোটা বাতিল ও ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দাবিতে আমরা অনড় আছি। কিন্তু শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে নির্বাচন খুবই কষ্টকর হবে। অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন। প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তে উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।”


ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, “পোষ্যকোটা বাতিলের পক্ষে আমরা। কিন্তু গুটিকয় শিক্ষক-কর্মকর্তা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছেন। এই মুহূর্তে জানি না, নির্বাচন হবে কি না। পূজার ছুটির পরেই নির্বাচন হওয়া উচিত।”


‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন,  “এই পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”


রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “ক্যাম্পাসে স্থিতিশীল পরিস্থিতি না হলে ২৫ তারিখে নির্বাচন বৈধ হবে না। প্রশাসন পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে পারলে নির্বাচন সম্ভব।”


প্রসঙ্গত, ২০ সেপ্টেম্বর বিকালে উপ-উপাচার্য প্রশাসন ভবন থেকে গাড়ি নিয়ে বের হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটকে বিক্ষোভ করেন। পরে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর জুবেরী ভবনে ঢুকতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের জুবেরী ভবনে আটকে রাখেন। পরে ১৭টি হলের শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলন চালান। রাত একটার দিকে উপাচার্য পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। অন্যদিকে শিক্ষক লাঞ্চনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কর্মবিরতি পালন করেন।