 
      শীত প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলার বানানো এই ঋতুতেই লুকিয়ে আছে তাঁর কুদরতের নানা নিদর্শন।
কোরআনে বলা হয়েছে, “যেহেতু কুরাইশদের শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের আগ্রহ ছিল, তাই তাদের উচিত সেই গৃহের রবের ইবাদত করা, যিনি ক্ষুধায় আহার দেন এবং ভয় থেকে নিরাপত্তা দান করেন।"
(সুরা কুরাইশ, আয়াত ১-৪)
আরবের শীতকাল হলো 'জমাদিউল আউয়াল,' হিজরি সনের পঞ্চম মাস। এর পরের মাস জমাদিউস সানি। যার বাংলা অর্থ প্রথম শীত ও দ্বিতীয় শীত।
‘জমাদা’ শব্দের অর্থ স্থির, কঠিন, জমাট, নীরব। আরব দেশে এ সময় প্রচণ্ড শীতে পানি বরফে জমে যায়, প্রাণীরা নিথর হয়ে পড়ে। এ কারণেই মাসটির নামকরণ ‘জমাদা’।
ইমাম আবু হানিফা (রা.) বর্ণিত, “জমাদা হলো আরব দেশের শীতকাল, যা বসন্তের নিকটে এবং গ্রীষ্মের আগে।” কোরআনের আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তুমি পর্বতমালা দেখছ স্থির মনে হলেও, তারা মেঘের মতো সঞ্চারমান। এটি আল্লাহরই সৃষ্টি নৈপুণ্য।” (সুরা নামল, আয়াত ৮৮)
এই মাস আমাদের শিক্ষা দেয়, নীরবতার মধ্যেও আছে চিন্তা, স্থিরতার মধ্যেও আছে কাজের আহ্বান। ‘জমাদা’ শব্দে যেমন নিস্তব্ধতা আছে, তেমনি আছে দৃঢ়তা ও বিশ্বাস। তাই এ মাসে আমাদের উচিত নেক আমল, দোয়া, তাওবা ও সৎকর্মে ব্যস্ত থাকা।
ধর্মীয়ভাবে এই মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো, নফল নামাজ, নফল রোজা, দান-খয়রাত ও জিকির-আজকার।বিশেষ করে এই মাসের ১, ১০, ১৩, ১৪, ১৫, ২৯ ও ৩০ তারিখে রোজা রাখার ফজিলত রয়েছে। এ ছাড়া প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা, তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত ও আউয়াবিন নামাজ আদায় করাও মুস্তাহাব।
হাদিসে বলা হয়েছে, জান্নাতে প্রবেশকারী নেককারদের আফসোস থাকবে শুধু সেই সময়ের জন্য, যা তারা নেক আমল ছাড়া অতিবাহিত করেছে।” (তিরমিজি)
অতএব, জমাদিউল আউয়াল মাস শুধু শীতের প্রতীক নয়, এ মাস আত্মার উষ্ণতা জাগানোর সময়। নেক কাজ ও আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে এই মাস কাটালে লাভ করা যায় বরকত, ফজিলত ও রহমত।
আসুন, এই জমাদিউল আউয়াল মাসে আমরা সবাই নেক কাজের প্রতি আগ্রহী হই। দোয়া, ইস্তিগফার ও দান–খয়রাতে নিজেদের ব্যস্ত রাখি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই মাসের বরকত অর্জনের তাওফিক দিন।
 নিউজ ডেস্ক
                     নিউজ ডেস্ক 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                
