কর্মনিষ্ঠায় আলো ছড়াচ্ছেন ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুধু সরকারের নীতি বাস্তবায়নকারী নন, তিনি উপজেলা প্রশাসনের মূল চালিকাশক্তি। একজন দক্ষ ও দূরদর্শী ইউএনও চাইলে সমগ্র উপজেলাকে উন্নয়নের নতুন ধারায় এগিয়ে নিতে পারেন। এর বাস্তব উদাহরণ তৈরি করেছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বর্তমান ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা।


দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি শুধু অফিসকক্ষে সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং মাঠপর্যায়ে গিয়ে মানুষের সমস্যা শুনে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রতিদিন অফিস সময়ের বাইরেও শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনে তা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।




শিক্ষাখাতে তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছেন তিনি। কৃষকদের মাঝে সার-বীজ বিতরণ ও কৃষি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও স্বচ্ছভাবে বাস্তবায়ন করেছেন।


আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও তিনি রেখেছেন সাহসী ভূমিকা। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, ইভটিজিং দমন ও মাদকবিরোধী অভিযানে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাতের অন্ধকারেও গোপন অভিযানে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। পাশাপাশি অবৈধ নদী দখল, খাস জমি দখলমুক্তকরণ এবং অবৈধ ইটভাটা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।


স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা, ত্রাণ ও সরকারি অনুদান প্রকৃত সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছে দিতে অনিয়ম কমানোর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, “ইউএনও অফিস এখন আর কাগজপত্রের জটিল জায়গা নয়, বরং মানুষের সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু।”


কার্যকর প্রশাসনিক সমন্বয়ের জন্য তিনি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফলে উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।


কেশরহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাজরুল ইসলাম বলেন, “উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে তিনি শিক্ষা ও উন্নয়নে আন্তরিক ছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি শুধু নির্বাহী অফিসার নন, ছিলেন অভিভাবক ও পথপ্রদর্শক।”


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মোহনপুর উপজেলা শাখার আমির ও আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ জিএম আব্দুল আওয়াল বলেন, “তিনি সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন অফিসার। পাশাপাশি পরিশ্রমী এবং সবসময় জনসাধারণকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন। আমার দৃষ্টিতে তিনি দুর্নীতিমুক্ত এবং মোহনপুরের উন্নয়নে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য।”


মোহনপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মো. বানী ইয়ামিন বখতিয়ার জানান, “ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা নিরহংকারী ও ভদ্র মানুষ। আমাদের কলেজের মাঠ সংস্কার, মাছের হাট স্থানান্তর ও সড়ক উন্নয়নে তাঁর সহযোগিতা অনন্য। তিনি স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল ও মানবিক একজন ভালো মানুষ।”


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মোহনপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আর রশিদ বলেন, “দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর কার্যক্রমে আমরা সন্তুষ্ট। ভবিষ্যত জীবনে তাঁর সাফল্য কামনা করি।”


সবচেয়ে বড় কথা, নারী হয়েও দায়িত্ব পালনে তিনি কোনোভাবে পিছিয়ে নেই। সততা, কর্মনিষ্ঠা ও উন্নয়নমুখী পদক্ষেপে আজ মোহনপুরের মানুষ গর্বিত। স্থানীয়রা মনে করেন, আয়শা সিদ্দিকার মতো একজন সৎ ও যোগ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাওয়া তাদের জন্য সত্যিই আশীর্বাদ।