
ইরানকে আলোচনায় ব্যস্ত রেখে ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোরে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো যেখানে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে, সেখানে ভারত নিশ্চুপ। বরং এমন ভাষায় বিবৃতি দেয় যাতে ইসরায়েল খুশি থাকে।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলে ইসরায়েলের প্রতি একাত্মতা জানান নরেন্দ্র মোদি। একই দিনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী—কিন্তু কোনো সহানুভূতির ছাপ সেখানে ছিল না।
এসসিও-র বিবৃতিতে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা হয়। কিন্তু ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা এই বিবৃতিতে অংশ নেয়নি এবং এর সঙ্গে একমতও নয়।
জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ১৪৯টি দেশ ভোট দিলেও ভারত ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। তখন প্রশ্ন জাগে—ভারত ইসরায়েলের কাছ থেকে কী পাচ্ছে?
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জবাবে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে ভারত। পশ্চিমা দুনিয়ায় সে হামলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, কিন্তু ইসরায়েল তৎক্ষণাৎ পাশে দাঁড়ায়। ভারতের ব্যবহৃত অস্ত্রের তালিকায় ছিল ইসরায়েলের ড্রোন।
অন্যদিকে, হামাসের হামলার পর যখন বহু দেশ ইসরায়েল থেকে শ্রমিক সরিয়ে নেয়, তখন ভারত সেখানে নতুন করে শ্রমিক পাঠায়। শুধু ২০২৩ সালেই ১৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক যায় ইসরায়েলে।
ইরানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এর উল্টো চিত্র। ২০১৫ সালে দুই দেশের বাণিজ্য ছিল ১৫.৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে নেমে দাঁড়ায় মাত্র ২.২ বিলিয়নে।
একসময় যে ভারত ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিত, আজ সে ইসরায়েলের অনুগত।
মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, “ফিলিস্তিন যেমন আরবদের, তেমনই ইংল্যান্ড ইংরেজদের এবং ফ্রান্স ফরাসিদের।” আজকের ভারত যেন সেই কথার ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে।
ভারত কি আদতেই নিরপেক্ষ, নাকি কৌশলী মুখোশের আড়ালে সুবিধাবাদী? প্রশ্ন এখন সেটাই।