
১৩ জুন, শুক্রবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনায় একটি বড় বিমান হামলা চালায়। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে ইরান পাল্টা হামলার ঘোষণা দেয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘ট্রু প্রমিস–৩’।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার দিবাগত রাতে ইরান নবম দফায় ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এবার ইরান একা ছিল না; ইয়েমেনও সামরিক অংশগ্রহণ করে। ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) জানায়, হাইফা, নেগেভ মরুভূমি ও কিরিয়াত গাত এলাকায় ৩০ থেকে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
এই হামলায় ইসরায়েলের সামরিক ও অর্থনৈতিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। হাইফার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ড হয়, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায় ভয়াবহ আগুন ও উদ্ধার কাজ চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, অন্তত সাতটি ভবন সম্পূর্ণ ধসে গেছে এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
আইআরজিসি জানিয়েছে, অধিকৃত সরকারের অপরাধ বন্ধ না হলে এই অভিযান থামবে না। এই পরিস্থিতিতে লেবানন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ অউন বলেন, ইরানে হামলা শুধু তাদের বিরুদ্ধে নয়, এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার ওপর আঘাত।
হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে এবং ইসরায়েলের হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী বলে উল্লেখ করেছে। তবে লেবানন সেনাবাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
উত্তেজনার এই পর্যায়ে প্রশ্ন উঠছে, ইরান ও ইসরায়েলের এই লড়াই কি সীমান্ত পেরিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে এবং এক বিস্ফোরক যুদ্ধের রূপ নেবে?