
স্কুলের পাশে অবস্থিত স্যারের বাসায় প্রতিদিন সকালে হুমায়রাকে নিয়ে আসতেন স্যার—কখনো কোলে করে, আবার কখনো হাত ধরে স্কুলের দিকে নিয়ে যেতেন।
ছুটির পর সেই আদরের মেয়ে স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে ফিরে আসতো। আর আশা করতেন, স্যার ক্লাসও নেবেন—তবে এবার হুমায়রার সাথে আর স্যারের দেখা হবে না। স্যার কীভাবে মেয়েকে ছাড়া বেঁচে থাকবেন? এই শোক কীভাবে বার করবেন? ঈশ্বর, দয়া করে স্যারকে সহ্য করার শক্তি দিন—দু:খী শিক্ষার্থীর আহাজারি এভাবেই ছুঁয়ে যায় হৃদয়।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আজমাইন অনন্য গতকাল বিকেলে ফেসবুকে সেই হৃদয়বিদারক পোস্ট করেন, যেখানে আলোচ্য শিক্ষক দেলোয়ার হোসাইনের কন্যা, নবমাসীয় মেহেনাজ আক্তার (হুমায়রা), ৯ বছর বয়সে প্রাণ হারিয়েছেন উত্তরার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিমানটি প্রশিক্ষণ ভ্রমণে ওড়ার পর হঠাৎ কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রায় ১টা ৬মিনিটে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনের উপর বিধ্বস্ত হয়। এতে অন্তত ২০ জন নিহত ও ১৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে—এদের মধ্যে রয়েছেন স্কুলছাত্রছাত্রীও ।
নিহতের বাবা, বাংলা বিভাগের প্রভাষক দেলোয়ার হোসাইন, যদিও নিজে অক্ষত থাকলেও তাঁর একমাত্র মেয়ের যন্ত্রণায় পুরো পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। স্কুল ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া অবস্থান করছে। জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় টাঙ্গাইলের সখীপুরের গ্রামের ঈদগাহ মাঠে মেহেনাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কবরস্থানে দাফন শেষে গ্রামের তীব্র আওয়াজ ও দারুণ আবেগ-উদ্বেলিত পরিবেশ বিরাজ করে ।