ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদীর ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদ এবং জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদদাতা শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভ চলাকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানান। উপাচার্য বিচারকাজ সম্পন্ন করতে আরও সময় প্রয়োজন বলে জানালে শিক্ষার্থীরা তাতে অসন্তুষ্ট হন। বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁরা সেখান থেকে চলে আসেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে রেজিস্ট্রার ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে জাকসুর সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত তফসিল ঘোষণার ঠিক পরের দিন আজকে আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই হামলার অগ্রনায়ক ভারতীয় জুলাই গণভুত্থানের অগ্রনায়ক ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী কণ্ঠস্বর এদেশের যেই ফ্যাসিবাদী এস্টাবলিজম সেই স্টাবলিজমের বিরুদ্ধে যে কণ্ঠস্বর সেই কণ্ঠস্বরকে আজকে দিনে দুপুরে মোটরসাইকেল যোগে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবিদ্ধ করা। এই ইন্টেরিম সরকারের সার্বিক আওয়ামী সরকারের যে ফ্যাসিবাদের যে বিচার সে বিচারের যে ব্যর্থতা সে ব্যর্থতার একটি নমুনা দেখতে পেয়েছি।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রশাসক যে তালবাহানা আমাদের এই বর্তমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে দীর্ঘসূত্রিতা সে দীর্ঘসূত্রিতার মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। আমরা আজ এখান থেকে ঘোষণা দিচ্ছি যতদিন না পর্যন্ত উপাচার্য জুলাই হামলাকারীদের বিচার কার্যক্রম শেষ করতে পারছেন না ততদিন পর্যন্ত এই ক্যাম্পাসের টপ প্রায়োরিটির কোন কাজ হতে পারে না।”
বিক্ষোভ মিছিলে জাকসুর সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আহসান লাবিব বলেন, “আজকে আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক শরীফ ওসমান হাদির উপর আক্রমণ করা হয়েছে, গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে, এবং তিনি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ অবস্থায় আছেন। এ হামলাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং জুলাই হামলার সন্ত্রাসীদের বিচার না করা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার না করার ফলেই এ হামলাগুলো অব্যাহত রয়েছে।”
আহসান লাবিব আরও বলেন, “আগামী নির্বাচনকে দেশে অস্থির পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে এই হামলাগুলো করা হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলার সময় যারা দোষী ছিল—অভিযুক্ত শিক্ষকদের এখনো বিচার করা হচ্ছে না; রেজিস্ট্রার ভবনে আওয়ামী দোশর অবস্থান করছে এবং নিরপাত্তা অফিসেও তারা অবস্থান করছে। আমরা উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছি দ্রুত বিচার সম্পূর্ণ করতে হবে, এবং তিনি তালবাহানা করলে আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি—যতদিন না জুলাই হামলার দোষী ও অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচার নিশ্চিত হবে, ততদিন রেজিস্টার ভবনে তালা ঝুলবে।”

