
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় বসছেন ইউরোপের শীর্ষ তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামীকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, জার্মানির একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে।
সূত্রটি জানায়, মূল আলোচনার আগে জার্মানির স্থায়ী মিশনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পরে তাঁরা একসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
এই বৈঠকের উদ্যোগ এমন এক সময় নেওয়া হলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানের ওপর বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়, যার পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো জানিয়ে দেননি যে, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সামরিকভাবে যুক্ত হবে কি না—যা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
জার্মান কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ইরানকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করা যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।
বৈঠক শেষে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আরও গভীর ও কাঠামোবদ্ধ আলোচনা চালানোর কথাও জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল বরাবরই বলে আসছে, তারা তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সামর্থ্য সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে চায়। তবে ইরান তাদের অবস্থানে অনড়—তাদের দাবি, তারা কেবল শান্তিপূর্ণ প্রয়োজনে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করছে, সামরিক কাজে নয়।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। তিনি তেহরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরান যদি উত্তেজনা প্রশমনে উদ্যোগ না নেয়, তাহলে বড় ধরনের সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠবে।
এছাড়া জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল বুধবার এক বিবৃতিতে ইরানকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, "আলোচনার দরজা কখনোই বন্ধ করা উচিত নয়, সময় থাকতে সঠিক পথে ফিরলে সংকট এড়ানো সম্ভব।"