নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ দিন ব্যাপি মঞ্চস্থ হলো নাটক “শালবৃক্ষের মৃত্যু”
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক “শালবৃক্ষের মৃত্যু”।

নাটকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল সেমিস্টারের ‘অভিনয় অনুশীলন’ কোর্সের অংশ হিসেবে প্রদর্শিত হয়। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মামুন রেজা।

২০ ও ২১ আগস্ট দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের জিয়া হায়দার ল্যাবে। নাটকটির তৃতীয় প্রদর্শনী আগামী ২৩ আগস্ট ময়মনসিংহ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হবে।

সেলিনা হোসেনের “মৃত্যুর সূত্র কী” এবং মহাশ্বেতা দেবীর “শিকার” গল্প অবলম্বনে নির্মিত এ নাটকটি বন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবন, শালবনের অস্তিত্ব সংকট এবং শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের এক গভীর মানবিক দলিল হিসেবে দর্শকের সামনে উপস্থাপিত হয়।

কাহিনিতে ফুটে উঠেছে চলেশ, মেরী ও চলেশের মায়ের মতো চরিত্র, যারা আদিবাসীদের জীবন, সংস্কৃতি ও সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। পৈতৃক বনভূমি রক্ষায় নিরন্তর লড়াই করা চলেশ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয় ও পূর্বপুরুষের ভূমির প্রতীক হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, তরুণী মেরী বন ও সংস্কৃতির পবিত্রতা রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে যায় বন ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে।

নাটকে আদিবাসীদের প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক, শিকার উৎসবের মতো সাংস্কৃতিক উপাদান এবং শালবনকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মৃত্যু তাদের অস্তিত্ব ও আত্মপরিচয়ের সংকটকে প্রতীকীভাবে নির্দেশ করে।

এ বিষয়ে নাটকের নির্দেশক ড. সৈয়দ মামুন রেজা বলেন, দুর্বলের উপর ক্ষমতাশালীদের অন্যায় অত্যাচার, শাসন ও শোষণ মানবসভ্যতার পুরনো অধ্যায়। ক্ষমতা ও সম্পদের জোরে এক শ্রেণি সবসময় আরেক শ্রেণির উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে।

পৃথিবীর বহুবর্ণিল জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বারবার ধ্বংসের মুখে পড়েছে, হারিয়ে গেছে অসংখ্য ভাষা ও সংস্কৃতি, বিলীন হয়েছে অনেক সম্প্রদায়। আমাদের এই নাটক সেই শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে সংগ্রাম করা মানুষের কাহিনি তুলে ধরে—যা শুধু বিনোদন নয়, বরং বিশ্বজুড়ে চলমান অন্যায় ও আগ্রাসনের  তীব্র প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি।