
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌরসভার সাধারণ গ্রন্থাগার দীর্ঘ চার বছর বন্ধ থাকার পর আবার চালু হয়েছে। লাইব্রেরি উদ্বোধন করলেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাওয়া এই পাঠাগারটি ৮ই জুলাই মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন,
“লাইব্রেরি খোলার বিষয়ে বাজিতপুরের মানুষের যে উৎসাহ ও আগ্রহ, তা কিশোরগঞ্জের অন্য কোথাও আমি দেখিনি। আমরা চাই এই লাইব্রেরি টিকে থাকুক, আর কখনো যেন বন্ধ না হয়। আপনারা সবাই সন্তান-সন্ততিকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত বই পড়তে আসুন। বই আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ায়, চিন্তার জগৎ উন্মোচন করে এবং নতুন স্বপ্ন দেখার পথ দেখায়।”
তিনি আরও আশ্বাস দেন, লাইব্রেরিটি পূর্ণাঙ্গভাবে সরকারিকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বাজিতপুর সাধারণ গ্রন্থাগারের প্রথম ও দীর্ঘদিনের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ননী গোপাল শর্মা। ২০২১ সালের ৪ আগস্ট তাঁর মৃত্যুতে পাঠাগারটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বহু মূল্যবান বই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সাধারণ জ্ঞানপিপাসু মানুষেরা পাঠাভ্যাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
পাঠাগারটি পুনরায় চালুর দাবিতে দৈনিক আমার কাগজ-এর সাব এডিটর মোঃ ফারুক লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক ফারাশিদ বিন এনাম। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কার্যক্রম বাস্তবায়নের পথ তৈরি হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে লাইব্রেরি উদ্বোধন উপলক্ষে বাজিতপুরের চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence)" বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আফতাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী প্রথম স্থান অর্জন করে। পরে জেলা প্রশাসক বিজয়ী ও অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন
কিশোরগঞ্জ জেলা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সূফি সাজ্জাদ আল ফোজায়েল, বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফারাশিদ বিন এনাম, বাজিতপুর সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন নিবিড়, উপজেলা প্রকৌশলী বনি আমিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বাবুল মিয়া, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক রমজান আলী, জাতীয় নাগরিক পার্টির বাজিতপুর উপজেলা আহ্বায়ক রাহাগীর আলম মান্না, দৈনিক কালের কণ্ঠের হাওর অঞ্চল প্রতিনিধি নাসরুল আনোয়ার, বাজিতপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি খলিলুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
বাজিতপুর সেনা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যের ২৫ সেট ধ্রুপদী বই পাঠাগারের জন্য উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়, যা জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন ক্যাপ্টেন নিবিড়।
পাঠাগারটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মোঃ ইউসুফ আলীকে, যিনি স্থানীয়ভাবে সম্মানিত ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে পরিচিত।