ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে ধাওয়া ও অন্যান্য সাংবাদিকের ওপর মব করে আক্রমণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী তানজীর হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। এ ঘটনায় ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে প্রক্টরের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন তিনি ও তার সহকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাংবাদিক সূত্রে জানা গেছে, ওই হলের অবৈধ শিক্ষার্থীদের (নন-এলোটেড ও সাবেক শিক্ষার্থী) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ফিস্টের কুপন না দেওয়ায় মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে হলের প্রভোস্টসহ হল প্রশাসনকে অবরুদ্ধ করে হলের একদল শিক্ষার্থী। হলের ডায়নিংয়ে অবরুদ্ধের এক পর্যায়ে হল সংসদের ভিপি রায়হান কবির প্রশাসনের সূরে কথা বলছে এমন অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা ও হল সংসদের ভিপি-জিএস বসে থাকা টেবিলের দিকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছুড়ে মারে একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এরপর হলের প্রধান ফটকেও তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। হলের ভিতরে প্রবেশ করা সাংবাদিকসহ কাউকে বের হতে দেওয়া হয়নি। পরে রাত দেড়টার দিকে হলে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান এবং আলোচনায় বসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাংবাদিক জানান, এই ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক তানজীর। সংবাদ প্রকাশের পরও তিনি ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিলেন। এ সময় রসায়ন বিভাগের ৪৯ তম শিক্ষার্থী আহমেদ শামীম ও দর্শন বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রামিমের নেতৃত্বে ৫ থেকে ৭ জন , "ওই যে ওই নিউজ করছে ওরে ধর, আটকা, মারব" ইত্যাদি বলে ধাওয়া দেন। এক পর্যায়ে চোর চোর বলে তারা ধাওয়া দিতে শুরু করেন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে সাংবাদিক দৌড় দিলে তারা পিছু পিছু ধাওয়া দিয়ে হলের প্রধান ফটকে গিয়ে আটকান। এবং সংবাদ প্রকাশ কেনো করছে জানতে চেয়ে হলে ঢুকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন ভুক্তভোগী সাংবাদিককে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এবং ভুক্তভোগী সাংবাদিক ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এরপর তারা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন ও উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন এবং ঘিরে ধরে মব তৈরি করে আক্রমণের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শামীম সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুনকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক তানজীর হোসাইন বলেন, আমি সংবাদ প্রকাশের পর তারা আমার ওপর আক্রমণের উদ্দেশ্য ধাওয়া দেয়। ধাওয়া দেওয়ার আগে তারা বলে ওই যে ওই নিউজ করছে, ওরে ধর, মারব। আমি আত্মরক্ষার্থে দৌড় দিলে তারা পিছু পিছু ধাওয়া দেয় এবং মারধরের উদ্দেশ্য হলের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

