চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মানি মন্ডলের প্রতারণা
ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের কাবিলনগর গ্রামের মোঃ সহিদুল ইসলাম । তিনি কাবিলনগর গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে।

সে কানাডায় ভালো চাকরির স্বপ্নে সর্বস্বান্ত মোঃ সহিদুল ইসলাম খুইয়েছেন ভিটে বাড়ি, মাঠের জমি। ভালো চাকরির আশায় বিদেশে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন ছিল মোঃ সহিদুল ইসলামের। কিন্তু সেই স্বপ্নই এখন তার জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কানাডায় ওয়ার্কিং ভিসায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে পড়ে তিনি খুইয়েছেন ৯ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, চাকরি পাওয়ার আশায় মোঃ সহিদুল ইসলাম বিক্রি করেছেন তার ভিটেমাটি, কৃষিজমি, এমনকি এনজিও থেকে ঋণও নিয়েছেন। এখন সব হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ভুক্তভোগী মোঃ সহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, কানাডায় ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্মরত সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (ঝঊঈগঙ) মানি মন্ডল। তিনি মুজিবনগরের বল্লভপুর গ্রামের ভিনসেন্ট মন্ডলের মেয়ে। মোঃ সহিদুল ইসলাম জানান, মানি মন্ডলের স্বামী রুদ্র মণ্ডলও এই প্রতারণায় সহায়তাকারী।

মোঃ সহিদুল ইসলাম জানান, পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে মানি মন্ডল তার সঙ্গে কানাডায় চাকরি দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেন। সরকারি চিকিৎসক হওয়ায় তিনি তার ওপর সহজেই বিশ্বাস করেন।

২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে তারা একটি চুক্তি করেন, যেখানে উল্লেখ ছিল ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে চার মাসের মধ্যে কানাডায় পাঠানো হবে। সেদিনই মানি মন্ডল নগদ ৯ লাখ টাকা গ্রহণ করেন এবং বাকি টাকা ভিসা আসার পর নেওয়ার কথা বলেন।

তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে বিদেশ পাঠানোর কোনো উদ্যোগই আর নেননি মানি মন্ডল। বরং মালয়েশিয়া হয়ে কানাডা নেওয়ার কথা বলে শাহজালাল বিমানবন্দরের একটি ভুয়া টিকিটের কপি ধরিয়ে দেন। এরপর নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। মোঃ সহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চাকরির আশায় আমি আমার শেষ সম্বল বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেছি। এখন সব হারিয়ে পরিবার নিয়ে পথে বসেছি। আমার মতো কেউ যেন এভাবে প্রতারণার শিকার না হয়, আমি এর বিচার চাই।’

এদিকে, চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ৯ লাখ টাকা গ্রহণের চার মাসের মধ্যে মোঃ সাহিদুল ইসলাম কে কানাডায় পাঠাবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যর্থ হলে ক্ষতিপূরণসহ পুরো টাকা ফেরত প্রদান করবে মানি মন্ডল।

এই অঙ্গীকারনামায় তিনজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষর রয়েছে। এতে আরও উল্লেখ আছে, ‘কানাডায় পৌঁছানোর পর কাজ ধরিয়ে দিতে ব্যর্থ হলে, কাগজপত্রের ত্রুটি থাকলে বা বৈধতার সমস্যায় সহিদুলকে প্রবাস থেকে দেশে ফিরতে হলে তার সম্পূর্ণ দায় মানি মন্ডল গ্রহণ করবে। এবং ক্ষতিপূরণসহ সকল অর্থ ফেরত দেবে।’ মানি মন্ডলের প্রতারণার শিকার হয়ে মোঃ সহিদুল ইসলাম ন্যায়বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিষয়টি আইনগতভাবে নিষ্পত্তির জন্য তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্মরত সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মানি মন্ডলের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একাধিকবার চেষ্টা করেও অভিযোগের বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।