
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্ট আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম আসুন জাতীয় সরকার গঠন করি, দেশকে পুনর্গঠন করি। সকল বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলি। কিন্তু তারা সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। বরং বলেছে, ৩ মাস বা ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা ছাড়া দেশের সংস্কারের কোনও বিষয়ে তাদের কোনও সমর্থন পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি দেশের অভ্যন্তরে কোনও শত্রু তৈরি করতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে চাই। নির্বাচনী ভাগ-বাটোয়ারা নয়, দেশ সংস্কারে আমাদের দরজা এখনও খোলা আছে। তবে যদি এবারও সেই দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে জনগণ আপনাদের আর ক্ষমা করবে না।
আজ শনিবার ১২ জুলাই দুপুরে সাতক্ষীরা পৌরসভার আসিফ চত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি দেশ সংস্কার, বিচার এবং নতুন সংবিধান চেয়েছে। কিন্তু এই দাবির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে একটি বিশেষ মহল। তারা পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসকে টিকিয়ে রাখতে চায়। আমরা বলেছি গণঅভ্যুত্থানের পর, এত মানুষের আত্মত্যাগের পরও যদি কেউ পুরনো রাজনীতি করতে চায়, সেটা আর সহজ হবে না। গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনো মাঠে আছে। এখনও তাদের গর্জন রয়েছে। তারা ভেবেছিল ২/৩টি আসন দেখিয়ে, ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার লোভ দেখিয়ে এই বিপ্লবী শক্তিকে কিনে নেবে। কিন্তু যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদেরকে কেনার সাহস বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের হয়নি।
সাতক্ষীরা বাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, নানা দুর্যোগ ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আপনারা উপকূল রক্ষা করে চলেছেন। সাতক্ষীরার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যাতায়াত ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনার কথা আমরা জানি। ৫৪ বছরেও এখানে রেল পৌঁছেনি। জলবায়ু, সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা আমাদের দায়িত্ব। জাতীয় নাগরিক পার্টি এসব নিয়ে কাজ করবে। চাঁদাবাজদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যে দেশের ছাত্র-তরুণেরা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী হাসিনাকে দিল্লি পাঠাতে পেরেছে, তারা আর কোনও চাঁদাবাজের ভয় পাবে না।
ঐক্য ও প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে প্রস্তুতি নিন। ইনসাফভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতি বিরোধী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।
এর আগে দুপুর ১টায় খুলনা থেকে গাড়িবহর সাতক্ষীরায় পৌঁছায়। সাতক্ষীরার প্রবেশদ্বার কুমিরা বাজারে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের আমতলা থেকে আসিফ চত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।