
চট্টগ্রামে দুই ব্যক্তির শরীরে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় আইইডিসিআরের মতের অপেক্ষা করছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে প্রাপ্ত পরীক্ষার রিপোর্টে গতকাল সোমবার রাতে দুইজনের শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে এবং এখন তাদের সাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।”
সূত্র অনুযায়ী, আক্রান্ত দুই ব্যক্তি—একজন পুরুষ ও একজন নারী—দুজনেই চল্লিশোর্ধ্ব। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়ালিউল্লাহ ও ডা. মো. নুরুন্নবী তাঁদের নিজ নিজ চেম্বার থেকে রোগীদের ‘এপিক হেলথ কেয়ার’ নামের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করতে পাঠান। সেখানে করা পরীক্ষায় জিকা ভাইরাস ধরা পড়ে, এবং এই ফলাফল আইইডিসিআরকে জানানো হয়।
চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, “একই পরীক্ষায় ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস শনাক্ত করা যায়। রোগীদের উপসর্গ বিবেচনায় চিকিৎসকেরা জিকার পরীক্ষার পরামর্শ দেন এবং ফলাফল পজিটিভ আসে। তবে এই ধরনের অপেক্ষাকৃত অস্বাভাবিক ও কম দেখা রোগের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আইইডিসিআর থেকেই আসে।”
তিনি আরও জানান, চাইলে আইইডিসিআর আবার নমুনা পরীক্ষা করতে পারে। তবে তারা চাইলে বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্টের ভিত্তিতেও সিদ্ধান্ত জানাতে পারে।
চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত দুজনই জ্বর, শরীরব্যথা ও ত্বকে র্যাশে ভুগছেন, পাশাপাশি হাত ও পা ফোলা দেখা গেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জিকা ভাইরাসে ডেঙ্গুর মতো সরাসরি প্রাণহানির ঝুঁকি না থাকলেও গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এতে অনাগত শিশুর শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে।
চিকিৎসকেরা আরও বলেন, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা—এই তিন রোগই এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এদিকে চট্টগ্রামে শুধু জিকা নয়, আরও ৩০ জন চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।