
চুয়াডাঙ্গার জেলার জীবননগর উপজেলায় পাখি ভ্যানের ধাক্কায় মাত্র ৬ বছর বয়সী এক শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের কাটাপোল গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুটির নাম তাকিয়া সুলতানা। সে কাটাপোল গ্রামের বাসিন্দা মোঃ তরিকুল ইসলামের কন্যা এবং স্থানীয় কাটাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালেও তাকিয়া স্কুলে গিয়েছিল। স্কুল শেষে ছুটি পেয়ে সে একাই বাড়ির পথে রওনা দেয়। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে কাটাপোল বাজার এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগতির পাখি ভ্যান তাকিয়াকে ধাক্কা দেয়।
ধাক্কায় শিশুটি ছিটকে পড়ে যায় এবং তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত লাগে। দূর্ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা তাকিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্কুল, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই শোকাহত শিশুটির অকাল মৃত্যুতে।
শিশুটির সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং বিদ্যালয়ে শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, “কাটাপোল গ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সাথে সাথেই পুলিশ পাঠানো হয়। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং চালক ও গাড়ি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
নিহত তাকিয়ার পরিবার এখন শোকে ভেঙে পড়েছে। তার বাবা তরিকুল ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার মেয়ে স্কুলে গিয়েছিল, ফেরত এল লাশ হয়ে!” পথচারী ও সচেতন মহল দ্রুতগামী ও নিয়ন্ত্রণহীন যানবাহনের কারণে এমন দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
তারা দাবি করেন, কাটাপোল বাজারে স্পিড ব্রেকার না থাকায় এবং যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা বাড়ছে।সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুদের মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। তাকিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যু আবারও সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে। তাকিয়ার জানাজা আজ বিকালে গ্রামের ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পরিবার ও এলাকাবাসী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।