শিক্ষার্থীরা আবার ক্লাসে, কিন্তু শিক্ষকবিহীন KUET!
ছবিঃ সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) গত পাঁচ মাস ধরে ছাত্ররাজনীতির কারণে সংঘঠিত অচলাবস্থা কেটে না যাওয়ায় শিক্ষাজীবনের ওপর চাপ বেড়েই চলেছে।

উপাচার্য না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে, অন্যদিকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী সেশনজট নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। এর মধ্যেই ২১ ও ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষণামত আজ রোববার শ্রেণিকক্ষে ফিরে এসেছে। ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত পোস্ট জানায়, ‘সব নেতিবাচকতা ঝেড়ে ফেলে, আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ক্লাসে ফিরছি।’

তবে চমকদায়ক হলেও বর্তমানে শ্রেণিকক্ষে কোনো শিক্ষক উপস্থিত নেই, যা ইইই বিভাগের ৩১৫ নম্বর কক্ষে সন্তোষজনক উপস্থিতির পরও চোখে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনের সময় অনেক শিক্ষক ‘মনোক্ষুণ্ণ’ হয়ে গিয়েছিলেন এবং তারা তাদের কাছে ক্ষমাও চাইছেন। আন্দোলন শুরু হওয়ার আগে সিন্ডিকেট ঘোষণা করেছিল ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হবে, তবে এরপর নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে না। শিক্ষকরা আইনগতভাবে কোনো বাধার মুখে না পড়লেও কেন তারা আসছে না, তা অনিশ্চিত। ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বলছেন—‘আমরা বাধ্য হয়েই ক্লাসে এসেছি; আপনি যদি সদয় হন, আপনি ক্লাস শুরু করুন।’

অন্যদিকে, ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গত_session জটের পুনরাবৃত্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ এর আগেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভর্তি হয়ে ১৮ মাস ধরে জটের মধ্যে ছিল; এবার শুরুর পাঁচ মাস পার হলেও ক্লাস শুরু হয়নি, যা শিক্ষার্থী ও পরিবারের উপরে মানসিক চাপ তৈরি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, ‘ভিসি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত হবে না; ভিসি এলে শৃঙ্খলা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হবে।’ তবে শিক্ষক সমিতি জানিয়েছে—যারা সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত, তাঁদের বিচার না হলে তারা ক্লাসে ফিরবে না। গত ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকেও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

পৃথক ঘটনায় ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন, যার পর উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য অপসারিত হন। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলী অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেও ২২ মে পদত্যাগ করেন শিক্ষক বিক্ষোভের কারণে। এরপর ১০ জুন উপাচার্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়, কিন্তু এখনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি; এমনকি ১৫ জুলাই পর্যন্ত ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে সাময়িক আর্থিক ক্ষমতা দিয়ে রাখা হয়েছে কুয়েটের বেতন-ভাতা কার্যক্রম চালানোর জন্য। শিক্ষকরা পুনরায় জোর দিয়েছেন—ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার না হলে ক্লাস পুনরায় শুরু করা হবে না।