
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পৈলানপুর এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কিশোর বন্ধু নিহত হয়েছেন এবং আরেকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় বাজিতপুর-সরারচর আঞ্চলিক সড়কে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—পশ্চিম কুতুবপুর গ্রামের মোঃ কদর মিয়ার ছেলে মোঃ সিফাত (১৫) এবং সৌদি প্রবাসী মোঃ সালাউদ্দিনের ছেলে মোঃ হৃদয় মিয়া (১৬)। আহত আমির হামজা (১৭) একই গ্রামের মোঃ গেনু মিয়ার ছেলে এবং তিনিও এক প্রবাসী পরিবারের সন্তান।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, তিন বন্ধু একটি মোটরসাইকেলযোগে বাজিতপুর শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পৈলানপুর এলাকায় পৌঁছালে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিফাত ও হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে রেফার করেন। কিন্তু পথেই সিফাতের মৃত্যু হয় এবং হৃদয় ঢাকায় পৌঁছার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আহত আমির হামজা বর্তমানে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত দুই কিশোরই স্কুলছাত্র এবং এলাকাবাসীর কাছে সদালাপী ও হাসিখুশি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বাজিতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মুরাদ হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “দুর্ঘটনার পর আমরা ট্রাক ও চালক শনাক্তে অভিযান শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল এবং চালকের অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বাজিতপুর-সরারচর সড়কে নিয়মিতভাবেই দুর্ঘটনা ঘটছে। অতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া চালনার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ ও টহলদারির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আবারও সড়ক নিরাপত্তার করুণ চিত্র সামনে এনেছে। এলাকাবাসী আশা করছেন, এমন মৃত্যু যেন আর কোনো পরিবারের জীবনে না নামে—সেজন্য প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।