ছবিঃ বিপ্লবী বার্তা
কুড়িগ্রামে গত কয়েক দিনে শীত ও ঠান্ডার তীব্রতা বেড়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে দিনমজুর ও চরাঞ্চলের নিম্নআয়ের লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত শীতল বাতাসে কাঁপুনি বাড়ছে। দিনের বেলায় সূর্য ওঠলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত উষ্ণতা।
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার সোলেমান কাজী (৫০) ও আব্দুল খালেক (৬০) বলেন, “শীতের তীব্রতায় কুড়িগ্রামে মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি সমস্যায়।”
যাত্রাপুর ইউনিয়নের দিনমজুর কাদের মোল্লা (৫৭) জানান, “শীতের কারণে সকালে কাজে যেতে দেরি হয়। হাত–পা ঠান্ডায় অবশ হয়ে আসে। তবু কাজ না করে উপায় নেই পেট তো চলবে লাগবে।”
ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সাইদুল ইসলাম এবং নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ী ইউনিয়নের সবুজ ইসলাম জানান, “ঠান্ডা অনেক বেড়েছে। ছেলে–মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। এখনো কেউ কম্বল দেয়নি।”
অটোরিকশা চালক আখিমুদ্দিন (৫০) বলেন, “ঠান্ডায় অটো চালাতে হাত–পা জমে আসে। তারপরও জীবিকার জন্য বের হতে হয়।”
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে আসা রবিউল ইসলাম (৪২) জানান, “আমার ছেলের কয়েক দিন ধরে জ্বর–সর্দি, তাই ডাক্তার দেখাতে এসেছি।”
জেলার সিভিল সার্জন ডা. স্বপ্নন কুমার বিশ্বাস বলেন, “জেলায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি। তবে বিভিন্ন উপজেলা থেকে যারা আসছেন তারা আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।”
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন, “শীতবস্ত্র বিতরণের তালিকা তৈরি হয়েছে। খুব দ্রুত জেলায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ শুরু হবে।”
রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, “বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশা পড়ার সাথে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।”

