কুড়িগ্রামে টানা এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বেড়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পুরো জেলা কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শীতজনিত রোগ বেড়েছে, এবং খেটে খাওয়া মানুষজনের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার ১৬টি নদ-নদীর তীরবর্তী প্রায় ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ এই শীতে বিপাকে পড়েছেন। এসব এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা প্রচণ্ড শীতে ঘরবন্দী হয়ে থাকতে বাধ্য। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও চররাজিবপুর উপজেলার চরগুলোতে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি।
বৃদ্ধ, শিশু ও দিনমজুরদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। শীতের কারণে দিনমজুরদের কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে দৈনন্দিন জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। ধরলা নদীর তীরবর্তী একতাপাড়ার বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম (৫০) বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। ঘরে পরার মতো মোটা কাপড় নেই। রাতে ঘুমোতে গেলে ঠান্ডায় শরীর জমে যায়।” শিক্ষার্থী সুজন রহমান জানান, “শীতের কারণে পড়াশোনা করতে সমস্যা হচ্ছে। সকালে স্কুলে যাওয়া খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।”
রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, “আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকায় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। জেলায় গড় তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং ঘণ্টায় বাতাসের গতি ১০ থেকে ১৪ কিলোমিটার।”

